করোনাভাইরাসের জন্য চলমান বিধিনিষেধের সময় বিচারপ্রার্থী জনগণের স্বার্থ ও আইনজীবীদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের সুবিধার্থে হাইকোর্টের ৩৫টি ভার্চুয়াল এবং ১৮টি রেগুলার বেঞ্চ চালুর জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের সাধারণ আইনজীবী ঐক্য পরিষদের পক্ষে সংগঠনের আহ্বায়ক ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ড. মো. মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী এই স্মারকলিপি দেন।
বুধবার (১৯ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে এই স্মারকলিপি প্রদান করা হয় বলে বৃহস্পতিবার (২০ মে) জাগো নিউজকে এই আইনজীবী নিজে নিশ্চিত করেছেন।
স্মারকলিপির বিষয়ে মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে বিচার প্রার্থী জনগণের স্বার্থে ও আইনজীবীদের স্থবির হয়ে যাওয়া পেশা সচল ও স্বাভাবিক করার জন্য হাইকোর্ট বিভাগে অবিলম্বে ৩৫ টি ভার্চুয়াল কোর্ট, ১৮টি রেগুলার কোর্ট, আগাম জামিন শুনানির এখতিয়ার সম্পন্ন ফৌজদারি মোশন বেঞ্চ এবং দেশের সব নিম্ন আদালতে আসামির আত্মসমর্পণের অধিকার ও ইনজাংশন শুনানিসহ একচুয়াল কোর্ট স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু করার জন্য অনুরোধ করেছি।’
এর আগে একই দাবিতে গত ১৪ মে ঈদের দিন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের কাছে আবেদন করা হয়।
তারও আগে একই দাবিতে গত ২৭ এপ্রিল সাধারণ আইনজীবী ঐক্য পরিষদের পক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সামনের চত্বরে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে লকডাউনের সময় বিচারকাজ পরিচালনায় হাইকোর্টের ৩৫টি ভার্চুয়াল বেঞ্চ চালু রাখার দাবি করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবীদের একটি অংশ। সেখানেও নেতৃত্বে দিয়েছিলেন মোমতাজ উদ্দিন আহমেদ মেহেদী।
তারও আগে, সরকার ঘোষিত লকডাউন শুরুর পরে গত ৫ এপ্রিল ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগের কার্যক্রম সীমিত পরিসরে চলবে বলে পৃথক বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। বিজ্ঞপ্তির তথ্য অনুসারে, হাইকোর্ট বিভাগের চারটি বেঞ্চ এবং আপিল বিভাগের চেম্বার কোর্ট (মঙ্গলবার ও বৃহস্পতিবার) ৫ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত অতি জরুরি বিষয় শুনানি করবেন। এরপরে পর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে সাতটি বেঞ্চ করা হয় হাইকোর্টে। সুপ্রিম কোর্টে এখন অবকাশ চলছে।
গত ২৭ এপ্রিল সাধারণ আইনজীবী পরিষদের আহ্বায়ক মোমতাজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব, জুলহাস উদ্দিন আহমাদ, মাসুদ হোসেন, মো. মোজাম্মেল হক প্রমুখ অংশ নেন।
মানববন্ধনে মোমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘হাইকোর্টের ৩৫টি বেঞ্চ ভার্চুয়ালি পরিচালনার সক্ষমতা অর্জন করেছে বলে ইতোমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে। তা সত্ত্বেও লকডাউনের সময় কেন আগের মতো বেঞ্চ গঠন করা হলো না তা প্রধান বিচারপতির কাছে সাধারণ আইনজীবীরা জানতে চান। কেন চিফ জুডিশিয়াল ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট একটি করে চালু রাখা হলো, সাত হাজার আইনজীবী তা জানতে চান।’
প্রধান বিচারপতির উদ্দেশ্যে মোমতাজ উদ্দিন বলেন, ‘লকডাউনের সময় সুপ্রিম কোর্টে ৩৫টি ভার্চুয়াল আদালত চাই। কবে থেকে সুপ্রিম কোর্টে ৩৫টি ভার্চুয়াল আদালত বসবে তা সাধারণ আইনজীবীদের পক্ষ থেকে জানতে চাই। লকডাউন পরিস্থিতিতে নিম্ন আদালতে দায়রা জজ আদালত, জেলা জজ আদালতসহ সব আদালত ভার্চুয়ালি বসবে—এ দাবি করছি।’
লকডাউন শেষে আবার আগের মতো নিয়মিত কোর্ট ও ভার্চুয়াল কোর্ট বসবে এমন প্রত্যাশাও করেছিলেন তিনি।
295 total views, 1 views today