“প্রতিটি ধর্ষনের ঘটনায় আসামী পুলিশি হেফাজতে, শুধুমাত্র ঢা.বি.তে ঘটে যাওয়া আসামীরা এখনও সগর্বে ঘুরছে! তাহলে আন্দলোনের পিছনে কি অন্য উদ্দেশ্য?”
না এ উক্তিটি আমার না, এ উক্তিটি করেছেন আমার এক বড় ভাই এ,টি,এম খালিদ রানা, আগেই বলে নিচ্ছি ভাইয়ের উপর কেউ বিরুপ মন্তব্য করবেন না, ভাই আমার ব্যক্তি হিসাবে ভাল মনের মানুষ, উত্তম চরিত্রের অধিকারী, চেহারাটা সৃষ্টিকর্তা দিয়েছেন মারাশাল্লাহ। তাই আলোচনার আগে বড় ভাইয়ের উদ্দেশ্যে সকলকে অবগত করতে চাই যে আসলে ধর্ষনের সংগাটি কি? সংগাটি হলঃ “কারোর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ইজ্জতের উপর ইজ্জত রাখিয়া বেইজ্জত করিয়া ঘর্ষনের ফলে বর্ষন হোক বা না হোক তাহাকেই ধর্ষণ বলে”।
তা বড় ভাই এই সংগাটি ব্যখ্যা করলেই বুঝতে পারবেন কে ধর্ষক আর কে ধর্ষক নয়, আর কার পুলিশি হেফাজতে থাকার কথা আর কার পাবলিক হেফাজতে থাকার কথা। আচ্ছা আপনার কথা মত ধরেই নিলাম যে ঢাবির ছাত্রী ধর্ষণ হয়েছে, তাহলে আপনার কথা অনুযায়ী আমাকে বলতে হবে যে তামাম পৃথিবীর সমস্ত স্বামী গুলি ধর্ষক এবং তাঁদেরও আজ পুলিশি হেফাজতে থাকার কথা কেননা তারাও তাঁদের স্ত্রীদেরকে প্রতিনিয়ত ধর্ষণ করে।
দেখুন আমাদের দেশে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী আছে তারা চাষীদের কাছ থেকে অনেক সময় গম, ছোলা, মশুরীর মত কিছু শস্য কিনে তারা তার মধ্যে কিছু মাটি মিশিয়ে তা শস্যের দামে বিক্রয় করে দেয়। তবে বাস্তব বিষয় হল বিক্রেতা মাটি ফসল বলে চালিয়ে দিতে পারলেও ক্রেতা কিন্তু সেটাকে ঠিক-ই মাটিমুক্ত করেই খাওয়ার উপযোগী করে তোলে। তদ্রুপ আমারও ঢাবি ছাত্রীর ধর্ষণ বিষয়ে কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না।
আর আন্দলনের কথা বলছেন? সেটা হল আমাদের দেশে কোন অধিকার-ই আন্দোলন ছাড়া আদায় হয়নি। তারপরও ধন্যবাদ জানাই এদেশের সরকার ব্যবস্থা ও আইন শৃংখলা বাহিনীকে কারন তাঁরা আন্দোলনের কারনেই বিষয় গুলি আমলে নিয়েছেন।
আর একটু পিছনে যায়, সেটা হল আপনারা বলবেন যে ভিপি নূর যেহেতু ঢাবি ছাত্রীর সালিশে কোন সুরাহা করেনি সেহেতু সে ধর্ষণের সহযোগী। আচ্চা এবার আপনারাই বলুন ধর্ষনের মত কোন ঘটনায় দেশের আদালত ব্যতিত অন্য কোন সমাজ তার সমাধান দেবার অধিকার রাখে?
ঢাবি ছাত্রী যখন ধর্ষণের অভিযোগ থানায় দাখিল করেন তখন আইন শৃংখলা বাহিনী তাৎক্ষণিক বিষয়টিকে আমলে নিয়ে ভিপি নূরকে গ্রেপ্তার করে, কোন ক্লু না পেয়ে তাঁকে ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। হয়তো আপনারা এটাও বলবেন যে আন্দোলনের চাপে ভিপি নূরকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। তাহলে আমি বলবো কাদের মোল্লা, নিজামী, সাইদি সাহেবদের মুক্তির তাবিতেও তো অনেক আন্দোলন এদেশে হয়েছে, কিন্তু কই তাঁদের তো মুক্তি দেন নি?
ঠিক যখন সিলেটের এম,সি কলেজ, নোয়াখালীর বেগমগন্জের মত অগনিত ধর্ষণের লোমহর্ষক কিছু চিত্র নিয়ে যখন এদেশের প্রতিবাদী কন্ঠ রাস্তায় নামে ঠিক সেই সময় এদেশের ক্ষমতা প্রীতিরা ক্ষমতা হারানোর আতংকে বীথিদের মত কিছু ভাঙ্গা রেকর্ড উত্থাপন করে মুল বিষয়টিকে ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করে। বর্তমানে আমাদের দেশে একটা প্রথা চালু হতে যাচ্ছে, সেটা হল একটি ছেলে মেয়ের মধ্যে যখন-ই সম্পর্কের অবনতি ঘটছে ঠিক তখন-ই সেটাকে ধর্ষণের রুপ দেওয়া চেষ্টা চলছে।
এখানে কে কোন দল করে সেটা বড় কথা নয়, বড় কথা হল বর্তমানে চলছে সত্য আর মিথ্যার লড়াই। আমাদের দেশে এখন পর্যন্ত এমন কোন সংগঠন নেই যে তাঁদের গঠনতন্ত্রে কোথায় পাবেন না যে নারি ধর্ষণ এবং দেশের সম্পদ লুট বৈধতা দেয়া আছে। এমনকি যারা ডাকাতি করে তাদেরও কিছু আদর্শিক বৈশিষ্ঠ আছে যে তারা কোন বাড়িতে ডাকাতি করতে গেলে কোন নারীর উপর পাশবিক নির্যাতন চালায় না। সেখানে ছাত্রলীগ তো একটা আদর্শিক সংগঠন। আমি নিজেও এই ছাত্রলীগ সংগঠনের সাথে বেশ কয়েকটা বছর পার করেছি সেই সাথে এই সংগঠনে অনেক পদ-পদবীর সাথেও আমার সংশ্লিষ্টটা ছিল যেটা আপনিও জানেন। বর্তমানে আমার কোন পদ-পদবী নেই, তার কারন আমি কোন অসংগতিকে সমর্থন করি না। এক কথায় বলতে গেলে বর্তমানে রাজনৈতিক দূর্বিত্তায়নের কারনে আমার মত অনেকেই পদবী হারিয়েছেন। যাই হোক মূল বিষয়ে ফিরে আসি সেটা হল ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রের এমন কোন অনুচ্ছেদ বলা নেই, নারী ধর্ষণ, ইভটিজিং, দখলবাজী এবং সরকারের দূর্নীতির সাফাই গাইতে হবে।
তা বড় ভাই সংগঠনের আদর্শ যে সমস্ত বিষয় গুলি প্রশ্রয় দেয় না, সেখানে কেন আমি আপনি সেই সমস্ত অনাকাংখিত বিষয় গুলির সাফাই গেয়ে নিজেদের এবং সংগঠনকে বিতর্কিত করবো?
তাই আসুন আমরা প্রত্যেকেই সচতন হই, সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলতে শিখি। সেই সাথে রাজনৈতিক দূর্বিত্তায়নকে পরাজিত করে সুস্থ, সবল ও মূল ধারার রাজনীতি উদ্ধির করি। জয়বাংলা……… জয়বঙ্গবন্ধু…. জয় হোক সত্যের…… জয় হোক গণতন্ত্রের।
লেখক — শেখ মিসকিন, মেহেরপুর
652 total views, 1 views today