ঈদ মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় অনুষ্ঠান। ঈদ মানে খুশি, আমরা সেই বাল্যকাল থেকেই জেনে আসতেছি। বস্তুত এই কথাটি কি সবার জন্য চলে? না কি চলে না? আসলে যারা দুঃখী তাদের জন্য ঈদ সর্বদাই কষ্টের। একজন বিধবা মহিলা যখন দেখে অন্য একজন সধবা মহিলা তার সামনে কত মজা করে ঈদ উদযাপন করছে! তখন তার আরো কষ্ট বেড়ে যায়। আবার যার বাবা- মা নেই সে যখন দেখে অন্যরা বাবা- মার সাথে খুব আনন্দে ঈদ উদযাপন করছে তখন তার কষ্টের সীমা থাকে না। আবার একজন বাবা যখন তার একমাত্র আদরের সন্তানটিকে একটা নতুন জামা কিনে দিতে পারে না তখন তার কষ্টের সীমা থাকে না। করো প্রিয়তমা দুরে চলে গেলে তখন ঈদের দিন তাকে খুব বেশি মনে পড়ে। একজন শ্রমিক যখন এই করোনার মহামারি পার হয়েও কিছু টাকার আশায় কাজে যোগ দিয়ে সারা মাস কাজ করেও মাত্র ৬০% বেতন নিয়ে কোন রকম ঘরভাড়া আর দেনাদারের কিছুটা দেনা মিটিয়ে তার বাচ্চার একটা কাপড় তো দূরের কথা আধা কেজি গরুর মাংসও কিনতে পারে না তখন তার কি কষ্ট হয় সেটা একমাত্র ভুক্তভোগীই বুঝতে পারে। বাসায় যখন ছোট্ট ছেলেটা বলবে আব্বা নতুন জামা কই, মাংস কই তখন সেই শ্রমিক বাবার মনে হয় এই পৃথিবী যেন তার জন্য নয়, এটা শুধুই বড় লোকদের জন্য। সে কি করে এসব কিনে দিবে বাসায় বৃদ্ধ বাবার ঔষধ কেনার টাকায় তো থাকে না। একজন মালিক যখন ঈদ করতে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে পারে তখন একজন শ্রমিকের ভাত খাবার টাকা থাকে না। ইসলাম বলে শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর আগে তার টাকা পরিশোধ করো। কিন্তু আমরা কি সেটা বাস্তবে দেখতে পাচ্ছি? শ্রমিকদের সারাটা মাস কাজ করিয়েও কয়েক মাসের বেতন মালিকেরা আটকিয়ে রাখছে। তারা কি করে ঈদ উদযাপন করবে একবারও কেউ কখনও ভেবে দেখেছে? কত মানুষ ঈদের দিন নিরবে গোপনে তাদের অশ্রু বিসর্জন করে কেউ জানতেও পারে না । এই দুঃখী মানুষ গুলো আমাদেরই কারো আপন লোক। আমরা হয়তোবা তাদের সব আনন্দ দিতে পারবো না কিন্তু কিছুটা আনন্দ তো দিতে পারি। আমরা হয়তোবা তাদের সব প্রয়োজন মেটাতে পারবো না কিন্তু কিছুটা হলেও তো মেটাতে পারি। অন্তত তাদের একটু খোঁজ খবর নেওয়া এবং তাদের একটু সময় দেওয়া। হয়তো এই দুঃখী মানুষ গুলো একটু হলেও তাদের দুঃখ ভুলে থাকবে। সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা। সবাই মিলে সাবধানে ঈদ উদযাপন করুন। ভালো থাকুন। সুস্থ থাকুন।
ধন্যবাদসহ
সম্পাদক
atikurbd.com
251 total views, 1 views today