আগামীকাল ১৯ আগস্ট বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সদস্য, ঢাকা জেলা কমিটির সাবেক সম্পাদক, ব্রিটিশবিরোধী সংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর মৃত্যুবার্ষিকীতে সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম এবং সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম এক বিবৃতিতে কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর বিপ্লবী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে সমাজবিপ্লবের লড়াইকে অগ্রসর করার জন্য তরুণ প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর সংক্ষিপ্ত জীবনী
কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তীর জন্ম ১৯০৫ সালে। তাঁর বয়স যখন কৈশোরের কোঠায়, তখনই বিদেশি শক্তির পরাধীনতা থেকে মাতৃভূমির মুক্তির চিন্তা তাঁর অন্তরকে আলোড়িত করে। বারো-তেরো বছর বয়সে তিনি ঢাকার গোপন সশস্ত্র বিপ্লবী সংগঠন ‘বাণী সংঘে’ যোগ দেন। তৎকালীন বাংলায় গোপন সশস্ত্র বিপ্লবীদের দু’টি মূল ও প্রধান সংগঠন ছিল_ ‘অনুশীলন’ ও ‘যুগান্তর’। ঢাকার ‘বাণী সংঘ’ ছিল ‘অনুশীলন’ দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। ১৯৩০ সালে তিনি প্রথম পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। ১৯৩৮ সালেই তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সভ্যপদ লাভ করেন। পরবর্তীকালে তিনি পার্টির ঢাকা জেলা কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।
১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন সংগঠিত করার কাজে কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ২১ ফেব্রæয়ারির পরে জ্ঞান চক্রবর্তীসহ কমিউনিস্ট নেতাদের বিশেষভাবে পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছিল। ’৫২ সালে তিনি গ্রেপ্তার হন এবং ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন। ১৯৫৫ সালে জ্ঞান চক্রবর্তীকে আবার সদরঘাটে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ১৯৫৬ সালে তুলে কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী এবং তাঁর সাথে কমরেড শহীদুল্লা কায়সার (১৯৭১ সালের আলবদরদের হাতে শহীদ), কমরেড আলী আকসাদ প্রমুখ তরুণ কমিউনিস্টকে গ্রেপ্তার করে।
১৯৬৮ সালে গোপনে ঢাকা জেলা কমিটির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলে, কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী পুনর্বার জেলা কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ঐ বছর বাংলাদেশের (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের) কমিউনিস্ট পার্টির প্রথম কংগ্রেস কংগ্রেসে জ্ঞান চক্রবর্তী কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। সেই থেকে আমৃত্যু তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭৩ সালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির ঢাকা জেলা সম্মেলনে তিনি পুনর্বার জেলা কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হন। ব্যক্তিজীবনে তিনি অকৃতদার ছিলেন।
কমরেড জ্ঞান চক্রবর্তী ১৯৭৭ সালের ১৯ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন।
693 total views, 1 views today